‘‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’’- 2021 প্রকল্প’’ দেশে ১০ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় আদমশুমারি ও গৃহগণনা। মুক্তিযুদ্ধের কারণে ১৯৭১ সালে একবারই নির্ধারিত সময়ে জনশুমারি ও গৃহগণনার কাজ হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি হয় ১৯৭৪ সালে। সর্বশেষ ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে আদমশুমারি পরিচালিত হয়। সেই হিসাবে চলতি বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নতুন শুমারির (ষষ্ঠ) পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী ‘আদমশুমারি ও গৃহগণনা’র নাম পরিবর্তন করে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’ করা হয়। তাই ২০২১ সালের মধ্যেই শুমারি পরিচালনার বাধ্যবাধকতা থাকায় আগামী ২৪ থেকে ৩০ ডিসেম্বর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিবিএস।
বিবিএসের তথ্যমতে, বিবিএস পরিচালিত বৃহত্তম পরিসংখ্যানিক কর্মকাণ্ড হলো ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১-এর মাধ্যমে দেশের খানার সংখ্যা, খানায় বসবাসকারী সদস্যদের সংখ্যা, আর্থ-সামাজিক ও জনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করা হবে। এসব তথ্য দেশের সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতিনির্ধারণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এবারের শুমারিতে আইসিআর প্রশ্নপত্রের পাশাপাশি মাল্টি মোড (ট্যাব, পিক অ্যান্ড ড্রপ, টেলিফোন ইন্টারভিউ) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া এবারই প্রথম বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের (প্রবাসী) এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
জনশুমারির জন্য ট্যাব কেন জরুরি জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ট্যাব দিয়ে জনশুমারি করায় আমরা শুমারির এক মাসের মধ্যেই একটা প্রাথমিক তথ্য দিতে পারব। আর ৬৪ জেলার তথ্য ক্রস ম্যাচিং করে ৬ মাসের মধ্যে দিতে পারব। যে তথ্য এর আগে দিতে অনেক বেশি সময় লাগত। যেমন ন্যাশনাল হাউসহোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্পের তথ্য সংগ্রহ ২০১৮ সালে শেষ হলেও তথ্য ব্যবস্থাপনা না করতে পারায় এখনও শেষ হয়নি।
তিনি বলেন, ট্যাবের মাধ্যমে ডাটা সিকিউরড থাকবে। সফটওয়ারের মাধ্যমে একটার পর একটা তথ্য যোগ হবে। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তথ্য লকড হয়ে যাবে। এতে তথ্য গড়মিলের সুযোগ থাকবে না। জনশুমারির শেষে ট্যাব কি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা ট্যাব ৬ থেকে ৮ বছর ব্যবহার করা যায়। তাই আমরা এই ট্যাব অন্য প্রকল্পগুলোয় ব্যবহার করব। ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক শুমারি হবে সেখানে এই ট্যাব ব্যবহার করা হবে।
এবার জনশুমারি ও গৃহগণনা চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো- পর্যায়-১-এর আওতায় শুমারির ব্লক এলাকা প্রণয়ন, জিআইএস পদ্ধতি ব্যবহার করে দেশের সব এলাকা ম্যাপ ও জিও কোডের আওতায় স্বতন্ত্র শনাক্তকরণ মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে। পর্যায়-২-এর আওতায় শুমারি পরিচালনা, দেশের সব খানা, ব্যক্তি এবং আবাসন ইউনিট গণনা করা হবে। পর্যায়-৩-এর আওতায় শুমারি পরবর্তী জরিপ পরিচালনা শুমারির গুণগত মান পরিমাপ করা হবে এবং পর্যায়-৪-এর আওতায় আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপ পরিচালনা খানা ও জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস